চকরিয়া থানার ওসি হাবিবুর রহমানকে আইনী নোটিশ!

নিজস্ব প্রতিবেদক, চকরিয়া ◑

কক্সবাজারের চকরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. হাবিবুর রহমানকে আইনী নোটিশ দেয়া হয়েছে। আইনগত অধিকার প্রতিষ্ঠা ও পরিবারের সদস্যদের সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করার ব্যাপারে অনুরোধ জানিয়ে বৃহস্পতিবার (৯ জুলাই) দুপুরে ডাক যোগে এ আইনী নোটিশ পাঠানো হয়।

চকরিয়া উপজেলার ডুলাহাজারা ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের পাগলিরবিল এলাকার ভোক্তভোগী আব্দুল হাকিমের স্ত্রী রোজিনা বেগমের পক্ষে এ আইনী নোটিশ প্রদান করেন কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ আদালতের সিনিয়র আইনজীবি এ্যাডভোকেট মাহবুবুর রহমান। নোটিশের অনুলিপি বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের রেজিষ্ট্রার, মহা পুলিশ পরিদর্শক, চট্ট্রগ্রাম রেঞ্জের ডিআইডি, কক্সবাজার পুলিশ সুপার ও সহকারী পুলিশ সুপার চকরিয়া সার্কেল বরাবরেও পাঠানো হয়।

আইনী নোটিশে এ্যাডভোকেট মাহবুবুর রহমান দাবী করেন, চকরিয়া উপজেলার ডুলাহাজারা ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের পাগলিরবিল এলাকার বাসিন্দা ও আমার মক্কেল রোজিনা বেগমের স্বামী আব্দুল হাকিম তার ক্রয়কৃত জমিতে বসতঘর ও বিভিন্ন প্রকারের গাছ গাছালি নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে শান্তিপূর্ণভাবে ভোগ দখল করে আসছিলেন। কিন্তু তার পার্শ্ববর্তী প্রতিবেশীগণ দূর্লোভের বশবতী হয়ে গত ২০১৯ সালের ২৪ ডিসেম্বর সন্ত্রাসী কায়দায় আব্দুল হাকিমের বসতঘর জোর পূর্বক জবর দখলে নিতে চাইলে পরিবারের সদস্যগণ তাদের বাঁধা দেন।

পরবর্তীতে বিষয়টির ব্যাপারে আইনী প্রতিকার চেয়ে একই মাসের ২৬ ডিসেম্বর চকরিয়া থানায় একটি আবেদন করেন রোজিনা বেগম। যার এসডিআর নম্বর-৩২৭০। তাং-২৮/১২/২০১৯ইং। ওই আবেদনটির ব্যাপারে থানা কর্তৃপক্ষ যথাযত আইনগত পদক্ষেপ গ্রহণ না করায় রোজিনা বেগমের স্বামী আব্দুল হাকিম শান্তি শৃঙ্খলা রক্ষার প্রার্থনা জানিয়ে ২০২০ সালের ২ মার্চ বিজ্ঞ অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট কক্সবাজার আদালতে ফৌজদারী কার্য বিধির ১৪৪ ধারা মতে একটি এম আর মামলা (নং-৩৪৪/২০২০) মামলা দায়ের করেন।

বিজ্ঞ আদালত ওইদিনই এ মামলার শুনানী শেষে বিরোধীয় জায়গায় শান্তি শৃঙ্খলা বজায় রাখার জন্য চকরিয়া থানার ওসিকে নিদের্শনা প্রদান করেন।

আইনী নোটিশদাতা আইনজীবি এ্যাডভোকেট মাহবুবুর রহমান আরও দাবী করেন, থানা কতৃপক্ষ আদালতের নির্দেশনা হাতে পাওয়ার পর থানার উপপরিদর্শক (এস আই) রুহুল আমিন এ মামলার বিবাদীগনের প্রতি গত ২ জুন একটি নোটিশ প্রদান করেন। ওই নোটিশে বিরোধীয় জমিতে জবর দখল চেষ্ঠা থেকে বিরত এবং শান্তি শৃংখলা বজায় রাখার জন্য বিবাদীগণকে নির্দেশনা প্রদান করা হয়।

কিন্তু ওই নোটিশ প্রাপ্তির পর বিবাদীগণ ক্ষিপ্ত হয়ে রোজিনা বেগমের পরিবারের উপর একের পর এক হুমকী ধমকি প্রদান করতে থাকেন।

তারই ধারাবাহিকতায় বিবাদীগণ গত ১৫ জুন বিরোধীয় জায়গায় পাকা দেয়াল নির্মানের চেষ্ঠা করলে রোজিনা বেগম ও তার স্বামী আব্দুল হাকিম তাদের বঁাধা দেন। এ সময় বিবাদিগণ জমির প্রকৃত মালিক আব্দুল হাকিম ও তার স্ত্রী রোজিনা বেগমকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে ও লোহার রড় দিয়ে নৃশংস ও বর্বর কায়দায় গুরুতর আহত করে।

ঘটনার পরপরই স্থানীয় লোকজন সন্ত্রাসীদের কবল থেকে তাদেরকে উদ্ধার করে চকরিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে করেন। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আহত আব্দুল হাকিমের অবস্থা আশংকাজনক হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে রেফার করেন।

এ ঘটনায় রোজিনা বেগম বাদী হয়ে গত ১৬ জুন চকরিয়া থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করলে থানা কতৃপক্ষ বিষয়টি অস্বীকার করে কোনরূপ আইনগত পদক্ষেপ না নিয়েই ফিরিয়ে দেন।

আইনজীবি এ্যাডভোকেট মাহবুবুর রহমান থানার ওসি বরাবরে পাঠানো আইনী নোটিশে দাবী করেন, অপরদিকে বিবাদীগণের বশীভূত ব্যক্তি কতৃক দায়েরকৃত মিথ্যা অভিযোগ থানা কতৃপক্ষ আমলে নিয়ে অভিযোগের সত্যতা যাচাইয়ের কথা বলে থানার এস আই আব্দুল বাতেন, এস আই মোস্তফা ও এস আই স্বরুপ পালের মাধ্যমে রোজিনা বেগমের পরিবারের সদস্যগণকে পর্যায়ক্রমে থানায় হাজির হওয়ার নির্দেশনা প্রদান করেন। নোটিশ পাওয়ার পর আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হয়ে রোজিনা বেগম ও তার পরিবার থানায় হাজির হলেও অভিযোগকারী পক্ষ অনুপস্থিত থাকেন। বিবাদীগন রোজিনা বেগম ও তার স্বামীর উপর বর্বেরোচিত হামলার ঘটনা থেকে নিজেদেরকে বঁাচাতেই উল্টো তাদের বিরুদ্ধে একের পর এক মিথ্যা ও হয়রাণীমুলক অভিযোগ দায়েরের মাধ্যমে হয়রাণী করে চলেছেন।

এমতাবস্থায় প্রতিপক্ষের হয়রানী থেকে বাঁচতে থানায় দায়ের করা রোজিনা বেগমের এজাহারটি গ্রহন পূর্বক আইনী প্রতিকার গ্রহণ ও রোজিনা বেগমের পরিবারের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার অনুরোধ জানিয়ে এ আইনী নোটিশ প্রদান করা হয়।